ক্ষীয়মান অসুখ
মনের ব্যথা খ’সে যাচ্ছে।
এখন পাতাঝরা মরশুম,
যে শব্দেরা একান্ত আপন
ঈশ্বর যার খোঁজ পায়নি স্বয়ং—
ঝ’রে যাচ্ছে কথামালা সুতো ছিঁড়ে ইদানীং।
বাতাসে ডাল নড়ে, মন নড়ে
ন’ড়েচ’ড়ে ঝ’রে যায় বাসি নীল অসুখ।
অন্তরীণ ডানা
মানুষের সাথে কথা বললে মনে হয়
মানুষ — মানুষ তৈরির কারখানা।
অথচ আমার ভেতরে এক রঙিন দালান ছিল,
দক্ষিণ বারান্দায় প্রতি ভোরে অজানা সবুজ পাখি
এসে শিখিয়ে যেতো সূত্র ভোলার সুর।
পাখিটা ম’রে গ্যাছে।
আজকাল খুব বেশি মানুষের সাথে থাকি ব’লে
দালানের দেয়ালগুলো হয়ে গ্যাছে ফ্যাকাসে।
মানুষেরা আমার মগজে পুরে দিচ্ছে সূত্র,
“মানুষ — মানুষ তৈরির কারখানা।”
বিপথে নামতা বিস্মৃত
গলিত মগজ ফেলে উড়ে গ্যাছে মাছি।
বৃদ্ধ বসন্ত গিলে নিয়েছে আঁজলাভর্তি ভায়াগ্রা জল।
এয়ার ফ্রেশনারের বোতলভর্তি পরিমার্জিত পঁচা মাংসের ঘ্রাণ।
লাশগুলো ভুলে বসেছে হাঁটার সূত্র।
জাতির পতাকায় পেশাব করে যারা
তারা বসে আছে গদিমোড়া স্থাণু চেয়ারে।
চেতনার ভাস্কর্যে শ্যাওলা চেপে মুছে গ্যাছে রঙ।
এখন নতুন দিন,
মরা মাটি নতুন কুঁড়ির দখলে।
এখানে কেউ নতুনের নামতা জানে না।
শীতার্ত পৃথিবীর মৃত্যু গুচ্ছ
এ জীবনে যতোবার আমি ব্রোথেলে গিয়েছি
দরজায় দ্যাখা হয়েছে তার সাথে, চোখে ফসফরাস নিয়ে বলেছে,
পৃথিবীর আগুন নিভে গ্যাছে, এখন তাপের খুব প্রয়োজন।
গত বর্ষায় বিসর্জন দিয়েছিলাম হৃৎপিণ্ড।
চিম্বুক চূড়ো থেকে হৃদয় গড়িয়ে পড়ছিলো।
তুলে নিলো সে, কণ্ঠে বরফ তুলে বললো,
মৃত্যুহীনতায় ভুগছে পৃথিবী, গুচ্ছ গুচ্ছ মৃত্যু ছাড়া পৃথিবীর পেট ভরবে না।
গোরখোদকের মণিতে তাকে দেখি শেষবার।
যেমন সৌম্য চিরকাল। বললাম,
এবার তোমার মৃত্যু হোক, বারংবার মৃত্যুর পর
আমি আর পারছি না;
ক্লান্তিতে ম’রে যাচ্ছি।
রুটিন
ল্যাম্পপোস্ট নিভে গেলে জ্বলে ওঠে সময়।
কাক বুঝে যায় এখন সময় প্রাতরাশের।
বয়সী শরীর প্যাডেল চেপে ভাত খোঁজে।
এক লহমায় অন্তর্বাস তুলে নাও রুটিনমাফিক,
আমরা জেনে যাই আরেকবার ম’রে যাওয়ার দিন এসে গেছে।