নবাব আলী যাবে ইউরোপ, টিয়া-রঙা পাসপোর্ট,
কেডস-সানগ্লাস, আয়না চকচক, ঢাকা এয়ারপোর্ট।
ওমান বন্দর, তেলভরা শিপ, নবাব আলী কই?
‘ট্যাংকির নিচে চুপ করে থাক’ — ‘ওকে, তাই সই’।
‘নিতে হবে দম, কম কম — অক্সিজেন কম আছে’
তবু গুডলাক, নবাব আলী — লিবিয়ায় এসে গেছে।
ফোন ক্রিং ক্রিং, আটক নবাব আলী — লিবিয়ায়
টাকা — আরও টাকা দাও, নবাব আলী বাঁচতে চায়
গয়না টাকা, জমি টাকা, লিবিয়ায় যায় উড়ে
যায় যাক, সব যাক — শুধু নবাব ফিরুক ঘরে।
উপরে আকাশ, নিচে ব্লাক সি — সাগরের নাম ‘কালো’
ছোট্ট নৌকা? নো প্রোবলেম — ইঞ্জিনের দম ভালো।
শুধু কালো সাগরটা পার হতে হবে, আর বেশি দেরী নাই
কিন্তু এতো শীত? ক্ষয়ে যায় হাড়, বাতাসে ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা ছাই
ভুইলা থাক, নবাব, মনে কর — সখিনার ঠোঁটে গরম ধুঁয়া ওড়ে
আর মাত্র দুইটা দিন, সহ্য কর, ঐ যে ইউরোপ, ওই পারে
ঠাণ্ডা সাগরে দুই দিন? বহুত লম্বা, কাটে নাই সেই দিন
নৌকার কোনে পড়ে আছে দেহ — নামহীন, প্রাণহীন।
সাগর ভরা তারা নিয়ে ব্লাক সিতে ভাসছে আকাশ
ইউরোপের মাটি ছুঁলো নবাব আলীর স্বপ্নভরা লাশ।
শেষ বিকেল, আবছা আলো — নবাব আলীর মা —
পোলার কি দোষ? — অর নাকি ভিসা ছিলো না।
শীতের উঠানে অতিথি পাখি, ভীনদেশী স্বরে ডাকে
ঘোরে দেশে-বৈদেশে — ‘পক্ষিগুলারে ভিসা দেয় কে?’