হে তরুণ হে যুবক
হে শ্রমিক হে কৃষক
মেনো না হতাশা
আবার আসবে দিন সূর্যিত আলোর
আবার আসবে দিনসমূহ উজ্জ্বল
মানুষ জাগবে ফের, জাগবে মানুষ।
নিদারুণ দুঃসময়ে আমাদের অধিবাস আজ
নির্দয় সূর্যের তাপে ফেটে যায় মাটি ও মনন
কামরুলী জানোয়ার দাঁতে ঘষে দাঁত
জয়নুলের কাকেরা করে কা-কা স্বদেশ ভাগাড়ে
কাক ও কুকুর ছাড়া আর কোন প্রাণী যেন নেই
হতাশা ও ধোঁয়া ছাড়া আর কোন দৃশ্যকল্প নেই
মানুষ নিরাশ আজ মানুষের আস্থা নেই অন্নদাত্রী মৃত্তিকার প্রতি।
চারিদিকে অন্ধকার ছিদ্রহীন শেষহীন অদ্ভুত আঁধার
বিলাপ ও আর্তনাদ ছাড়া কোন উচ্চারণ নেই
আপোষ ও বেঈমানী ছাড়া আর কোন রাজনীতি নেই
উৎকোচ ও দুর্নীতি ছাড়া কোন কারবার নেই
সামরিক উর্দি ছাড়া আর কোন ভগবান নেই।
মানুষ ঘুমিয়ে সব বেঘোরে অঘোরে যেন অনন্ত শয়নে।
তথাপি হে সাথী
হে কৃষক ক্ষেতের মজুর
ছাত্র বন্ধু
শ্রমজীবী মৌলিক মানুষ
হে কামার হে কুমোর জেলে তাঁতী মাঝি-মাল্লা কুলি
একবার প্রাণ খুলে কান পেতে ধরো
একবার অন্তর্দৃষ্টি মেলে ধরে দ্যাখো
মানুষ কি জানে নাই তুফানের প্রচণ্ড গতিতে
জীবন কি জাগে নাই মরণের আবরণ ভেঙে
জীবন কি জানে নাই বারুদের বিস্ফোরণ ঠেলে?
বাহান্নোয় একদিন জেগেছিল সব
আবার আসেনি কি মহাজাগরণ
সুমহান একাত্তরে?
বেহেস্ত হতে নয়
মানুষের মাঝ থেকে
মানবিক কণ্ঠ কি গর্জে ওঠে নাই
‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
কলিমুদ্দিন শেখ মুই, অমপুরে আবাস হামার
বিশ্বাস কি অয় বাহে এই মুই যুদ্ধে গেছিলাম
মুইতো একেলা নও অনেকেই আছিল সাথোত
লাঙ্গল ফেলিয়ে বাহে এই হাতে অস্ত্র নিছিলাম।
সময় দিয়াছে ডাক হামার কি সাধ্য বসি থাকিবো ঘরোত
ঘরের বাহির হয়া ঝাঁপ দিই আকুল গাঙ্গেতে
চোখে মোর এক ছবি সামনের তীরেতে নতুন
জীবনতো আছে এক, সোনার খাঁচায় নয়,
ক্যামন স্বাধীন এক নতুন জীবন,
আকুল বানের তোড়ে ভাসি ভাসি যুদ্ধে চলি যাই
হামার দ্যাশের লাগি কলিম কিষাণ মুই যুদ্ধে চলি যাই
মরণের ভয়ডর ফেলি মুই যুদ্ধে চলি যাই
দু’মুঠা ভাতের লাগি যুদ্ধে চলি যাই।
দারুণ মিছিল আসে মানুষের মুক্তির মিছিল
আসে চাষা আসে চাষী অস্ত্র তুলে নেয়
আসে ছাত্র আসে যুবা অগ্নি জ্বেলে দেয়
আসে মাতা আসে বধু দাহ জ্বেলে দেয়।
মানুষের উদ্বোধনে অবিশ্বাসী হয়ো না মানুষ
মানুষের উজ্জীবনে আস্থাহীন হয়ো না সারথী
আবার আসবে সেই সময়ের বাঁক
আবার আসবে সেই জাগরণী ধবল প্রহর
ইতিহাসের প্রগতি রুদ্ধ করে শক্তি আছে কার
মানুষের অগ্রযাত্রা বন্ধ করে শক্তি আছে কার!
মানুষ জাগবে ঠিক
পুনরায় জাগবে মানুষ।