সকলেই কিছু না কিছু করছে— তৈরি করছে বাড়ি,
কেউ জাহাজ, কেউ তরবারি।
তাদের সব তৈরী হয়ে গেছে—
তাদের বাড়ি, তাদের জাহাজ আর তরবারি।
এখন তারা বাস করছে, সাজিয়ে তুলছে বাড়ি,
এখন তারা জাহাজ নিয়ে চলে যাচ্ছে অনেক দূরে আবার দেশে
ফিরে আসবে বলে,
এখন তারা যুদ্ধ করছে, একটা কিছু বাঁচিয়ে রাখতে তুলে ধরছে
নিজের হাতে বানানো তরবারি।

কিন্তু আমার নিজেকেই তো তৈরী করা শেষ হলো না
যে তোমার দিকে নতুন একটা হাত বাড়িয়ে হাত ধরতে পারি।

আমার দুটো হাত ছিল তা অনেক আগেই কাটা গেছে,
আমার দুটো পা ছিল সে অনেক আগেই ভুলে গেছে হাঁটা,
আমার দুটো চোখ ছিল তা অনেক আগেই
নগ্ন রোদ পুড়িয়ে দিয়ে গেছে চোখের তারা
আমার যে মনে একটা স্তবের কিছু উচ্চারণ ছিলো—
সেই মনের মধ্যে এখন শুধু স্তব্ধ তার
পিঁপড়েগুলোর
অনবরত চলা।

আর তার ভেতরেই তুমি। হঠাৎ করে তুমি।
তোমার মতো যে আছে যার
তার দরকার কি বাড়ি কিম্বা জাহাজ, তরবারি?
তুমিই তার বাসা এবং দূরে যাবার যান
এবং বাঁচিয়ে রাখার জন্যে যখন দরকার তো
তুমিই সেই ব্যক্তিগত ব্যক্তিগত তীক্ষন তরবারি।
কিন্তু নিজেকেই তো তৈরী করা শেষ হলো না
যে হাত বাড়িয়ে হাত ধরতে পারি,
যে পা বাড়িয়ে সঙ্গে যেতে পারি,
যে চোখে আবার স্বপ্নগুলো জমা রাখতে পারি,
যে তোমার সঙ্গে এক আসনে বসে আবার আমি
শ্লোক রচনা করতে পারি।

তোমার যদি ইচ্ছে থাকে ইচ্ছে দিয়েই পারি,
আমি সব তোমার জন্যে তৈরী করতে পারি।
না হয় কিছু দেরী হয়েই যাচ্ছে, না হয় গেলো,
না হয় অনেক দেরী হয়েই গেছে—
তবু এখনো তো পারি, আগের মতোই পারি,
যেমন লোকে বানায় বাড়ি, জাহাজ, তরবারি—
আমি আমার নিজেকে ঠিক তোমার জন্যে তৈরী করে
হাত বাড়াতে পারি এবং
সঙ্গে নেবার জন্যে আবার পা বাড়াতে পারি।

Loading

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *